রমজানের কাজা ও কাফফারা কী ও কীভাবে অাদায় করতে হয়?
রমজান মাসে যারা অসুস্থ বা পীড়িত, অতিশয় বৃদ্ধ, যাদের দৈহিক ভীষণ দুর্বলতার কারণে রোজা পালন করা খুবই কষ্টদায়ক হয় এবং যারা ভ্রমণে থাকার কারণে সিয়াম পালন করতে পারে না, তাদের জন্য রোজার কাজা, কাফফারা ও ফিদ্ইয়া ইত্যাদি বদলা ব্যবস্থা স্থির করে ইসলামি শরিয়তে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান রয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। এটা (সিয়াম) যাদের অতিশয় কষ্ট দেয়, তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ‘ফিদ্ইয়া’ অাদায় করতে হয়।
যেসব কারণে রমজান মাসে রোজা ভঙ্গ করা যাবে কিন্তু পরে কাজা করতে হয় তা হচ্ছে:-
১. মুসাফির অবস্থায়।
২. রোগ-ব্যাধি বৃদ্ধির বেশি আশঙ্কা থাকলে।
৩. মাতৃগর্ভে সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।
৪. এমন ক্ষুধা বা তৃষ্ণা হয়, যাতে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকতে পারে।
৫. শক্তিহীন বৃদ্ধ হলে।
৬. কোনো রোজাদারকে সাপে দংশন করলে।
৭. মহিলাদের মাসিক হায়েজ-নেফাসকালীন রোজা ভঙ্গ করা যায়।
যেসব কারণে শুধু কাজা আদায় করতে হয় (অর্থাৎ একটির পরিবর্তে একটি) :-
১. স্ত্রীকে চুম্বন বা স্পর্শ করার কারণে যদি বীর্যপাত হয়।
২. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে।
৩. পাথরের কণা, লোহার টুকরা, ফলের বিচি গিলে ফেললে।
ডুশ গ্রহণ করলে।
৪. নাকে বা কানে ওষুধ দিলে (যদি তা পেটে পেঁৗছে)।
মাথার ক্ষতস্থানে ওষুধ দেওয়ার পর তা যদি মস্তিষ্কে বা পেটে পেঁৗছে।
৫. যোনিপথ ব্যতীত অন্য কোনোভাবে সহবাস করার ফলে বীর্য নির্গত হলে।
৬. স্ত্রী লোকের যোনিপথে ওষুধ দিলে।
<
যেসব কারণে কাজা ও কাফফারা উভয়ই আদায় করতে হয় (অর্থাৎ একটির পরিবর্তে ১+৬০= ৬১টি রোজা রাখতে হবে):-
১. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
২. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে সহবাস করলে।
রোজার কাজা ও কাফফারা:
শরিয়তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে রোজা ভঙ্গ করলে তাকে অবশ্যই কাজা-কাফফারা উভয়ই আদায় করা ওয়াজিব। যতটি রোজা ভঙ্গ হবে, ততটি রোজা আদায় করতে হবে। কাজা রোজা একটির পরিবর্তে একটি অর্থাৎ রোজার কাজা হিসেবে শুধু একটি রোজাই যথেষ্ট। কাফফারা আদায় করার তিনটি বিধান রয়েছে।
১. একটি রোজা ভঙ্গের জন্য একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। কাফফারা ধারাবাহিকভাবে ৬০টি রোজার মাঝে কোনো একটি ভঙ্গ হলে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে।
২. যদি কারও জন্য ৬০টি রোজা পালন সম্ভব না হয় তাহলে সে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খানা দেবে। অপর দিকে কেউ অসুস্থতাজনিত কারণে রোজা রাখার ক্ষমতা না থাকলে ৬০ জন ফকির, মিসকিন, গরিব বা অসহায়কে প্রতিদিন দুই বেলা করে পেটভরে খানা খাওয়াতে হবে।
৩. গোলাম বা দাসী আজাদ করে দিতে হবে।
ফিদ্ইয়া কী?
‘ফিদ্ইয়া’ অর্থাৎ একজন অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎ কাজ করে, তবে তা তার পক্ষে অধিক কল্যাণকর। ‘যদি তোমরা উপলব্ধি করতে তবে বুঝতে সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণপ্রসূ।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৪)
★★রমজান মাস ছাড়া অন্য সময়ে রোজা ভঙ্গের কোনো কাফফারা নেই, শুধু কাজা আছে।★★
★★যত দ্রুত সম্ভব কাজা সাওম গুলো আদায় করা যায় তত ভাল। তবে আগামি রমজানের আগ পর্যন্ত সময় কাজা সাওম গুলো আদায় করার।★★
★★কাজা সাওম গুলো টানা আদায় করা সর্বোত্তম। তবে একটা একটা করে আদায় করলেও হবে।★★
★★কাজা সাওম গুলো টানা আদায় করা সর্বোত্তম। তবে একটা একটা করে আদায় করলেও হবে।★★